চীনের রক্ষণশীল মুসলিমদের কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

চীনের রক্ষণশীল মুসলিমদের কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

চীনের জিনজিয়াংয়ের অঞ্চলের যে সব অধিবাসী ‘চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের বিষে আক্রান্ত’ ও বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে, তাদেরকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রক্ষণশীল ইসলামিক পদ্ধতি মেনে চলে এমন মুসলিমদেরও একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার হামি শহরের সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের অফিসিয়াল একাউন্টে এই নির্দেশের নোটিশ পোস্ট করে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

নোটিশে বলা হয় যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের কাছে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করবে তাদের অপরাধ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা হবে বা তাদের শাস্তি থেকে রেহাই দেয়া হবে।

চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মসুলিমকে বিশাল বন্দী শিবিরে আটকে রাখা ও তাদের ওপর নজরদারির অভিযোগে সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বেইজিং।

চীন এই সমালোচনা নাকচ করে দিয়ে বলেছে, তারা সংখ্যালঘুদের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু, ‘চরমপন্থি’ দলগুলোর প্রভাব মোকাবেলায় তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা দরকার।

‘যেসব ব্যক্তি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত বা ‘তিনটি শয়তানি শক্তির’ বিষে আক্রান্ত তাদেরকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক প্রতিষ্ঠানের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বীকারোক্তি এবং তাদের অপরাধের বিষয়ে তথ্য দিতে বলা হচ্ছে,’ জানানো হয় নোটিশে।

এতে আরও বলা হয়, বিদেশি ‘সন্ত্রাসী’ দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং রক্ষণশীল ইসলামি আদবকায়দা মেনে চলে এমন ব্যক্তিদের আত্মসমর্পণ করতে হবে।

যারা কোরান অনুযায়ী সম্পূর্ণ জীবন যাপন করে, অন্যকে টিভি দেখতে বাধা দেয় বা মদ ও ধূমপান নিষিদ্ধ করে এবং বিয়েতে নাচ গানে নিষেধ করে তাদের সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয় নোটিশে।

আপত্তিকর আচরণের তালিকায় আরও রয়েছে, প্রকাশ্যে সরকারি পরিচয়পত্র নষ্ট করা, সরকারের দেয়া বাড়ি, সুবিধা, সিগারেট ও মদ ‘হারাম’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করা।

যারা স্বেচ্ছায় ধরা দিবে তাদের সাজা কম হবে। তাদের দেয়া তথ্য গুরুত্বপূর্ণ কোনও ক্লু পাওয়া গেলে পুরো শাস্তি মাফ করে দেয়া হবে জানানো হয় নোটিশে।

আগস্ট মাসে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, গণ-বন্দীশিবিরে ১০ লাখ বা তার বেশি সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমকে গোপনে আটকে রাখা হয়েছে বলে বিশ্বস্ত রিপোর্ট পাওয়া গেছে।

চীন দাবী করছে, তারা কাউকে জোর করে রাখেনি বা রাজনৈতিক মগজধোলাই করেনি।

গণহারে বন্দীশিবিরে আটকে রাখা ছাড়াও চীনের সরকার মানুষের প্রাত্যহিক ধর্মীয় আচরণকে সীমিত রাখার বিধিনিষেধও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা।

রয়টার্স জানায়, গতমাসে ওই এলাকার রাজধানী উরুমকিতে বিভিন্ন হালাল খাদ্য ও টুথপেস্টের মতো বিভিন্ন পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হয়। এসব পণ্যের মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ জীবনে ইসলামি আইনের অনুপ্রবেশ এই অভিযান চালানো হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment